প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনূস ও তাঁর সফরসঙ্গীরা সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে একটি ব্যক্তিগত সফরে লন্ডন আসেন। সফরের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ রাজার কাছ থেকে একটি সম্মাননা গ্রহণ এবং বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ।তাঁদের অবস্থানের জন্যে বেছে নেয়া হয় লন্ডনের অন্যতম ব্যয়বহুল “দ্যা ডরচেস্টার হোটেল”। সেখানে ৪ রাতের জন্যে রিজার্ভ করা হয় মোট ৩৭টি কক্ষ। হোটেল বিলের একটি অনুলিপি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ৩৯ সদস্যবিশিষ্ট এই সফরদলের জন্যে ব্যয় হয়েছে মোট ২১০,৩২৫ ব্রিটিশ পাউন্ড—বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা (১ পাউন্ড = ১৬৬ টাকা হিসেবে)।এই সফরে প্রধান উপদেষ্টার নিজ কক্ষটিই ছিল সবচেয়ে ব্যয়বহুল। দৈনিক ৬,০৪৫ পাউন্ডে (প্রায় ১০ লক্ষ টাকা) ভাড়া নেয়া কক্ষটির চার রাতের জন্য খরচ হয়েছে ২৪,১৮০ পাউন্ড বা প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে বিদেশ সফরে সম্মান ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় উচ্চমানের হোটেল নির্বাচন অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই সফর বাংলাদেশের কী লাভ এনে দিল?এটি দ্বিপাক্ষিক কোনো রাষ্ট্রীয় বৈঠক ছিল না, ছিল না কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতা।
সফরের প্রাপ্তি বলতে ছিল কেবল একটি ব্যক্তিগত পুরস্কার এবং একটি রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে ব্যক্তিগত বৈঠক।এছাড়াও, বাংলাদেশ বিমানের লন্ডন রুটে সরাসরি ফ্লাইট থাকা সত্ত্বেও সফরদল ভ্রমণ করে এমিরেইটস এয়ারলাইন্সের ফার্স্ট ও বিজনেস ক্লাসে, যা ব্যয়বহুল এবং জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থাকে উপেক্ষার নামান্তর।সরকার প্রধান কিংবা উপদেষ্টাদের রাষ্ট্রীয় সফর বরাবরই জনস্বার্থের সঙ্গে যুক্ত। তবে এমন এক ব্যয়বহুল সফর, যা জনস্বার্থে কোনো দৃশ্যমান সুফল বয়ে আনেনি—তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক।